বই: ক্যাথরিন পার ও অন্যান্য।
লেখক: মরিস ব্যারিং।
ভাষান্তর: ক্যাথরিন পিউরীফিকেশন ম্যাডাম।
আমি সবসময় চাইতাম আমার কোন শিক্ষক লেখক থাকবেন। এমনকি কলেজে গাজী সামিয়া সুলতানা ম্যাডামকে বলতাম, আপনি লিখতে পারেন না? তিনি হেসে বলতেন, পিএইচডি শেষ করে লিখবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হওয়ার পর শিক্ষকদের সম্পর্কে যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ইন্টারনেটে সার্চ করে দেখছিলাম তখন আমার সামনে আসে ক্যাথরিন পিউরীফিকেশন ম্যাডামের বই। এরপর বই সংগ্রহ করার জন্য অনলাইন পরিবেশক রকমারি সঙ্গে যোগাযোগ করে বইটি না পেয়ে আরো সন্ধান শুরু করি। পরে থিয়েটার বিষয়ক পত্রিকা ক্ষ্যাপা'র পাভেল রহমান ভাইয়ের সাথে কথা বলে বই প্রাপ্তি আশা দেখতে পাই। বইটি হাতে পেয়ে ক্যাথরিন ম্যাডামের অটোগ্রাফ আনতে যাই। অটোগ্রাফ না পেলেও সুন্দর একটি শব্দ ও ম্যাডামের ডিজাইন করা সিলমোহর পাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়। বইটি হাতে পেয়েই পড়তে শুরু করি। আমার বাবা-মা শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত বিধায় বইয়ের সঙ্গে আমার একটু বেশি ভালোবাসা বিনিময় হয়। তবে অন্য সকল লেখকের বইয়ের থেকে “ক্যাথরিন পার ও অন্যান্য” বইটি আমার কাছে বিশেষ। কারণ এই বইটি আমার শিক্ষকে।
হুমায়ুন আজাদ তার "লাল নীল দীপাবলি বা বাঙলা সাহিত্যের জীবনী" গ্রন্থে অনুবাদ সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছেন, "যে-ভাষা যতো ধনী, তার অনুবাদ সাহিত্যও ততো ধনী।" অনুবাদ সাহিত্য বাংলা সাহিত্যের অনেক বড় একটা অংশজুড়ে রয়েছে। সাধারণত অনেক ব্যক্তি মাতৃভাষা ব্যতীত ভিন্ন ভাষায় পারদর্শী হয় না। তারা তাদের জ্ঞানার্জনের জন্য নিজের ভাষায় ভাষান্তরিত লেখা সন্ধান করে। এই সন্ধান থেকেই বাঙলা সাহিত্যের মধ্যযুগে কবিরা অনুবাদ করতে শুরু করেন। বাংলা ভাষায় কোরান, ইংরেজি ভাষায় বাইবেল বা অন্য ধর্মীয় গ্রন্থ অনুবাদ করতে গিয়ে শুরুর দিকে অনেক বাধার মুখোমুখি হয়েছিলো অনুবাদকরা। তবে প্রচলন শুরু ঐ সময়ে। ভৌগোলিক দূরত্বকে জয় করে এক দেশের মানুষের সঙ্গে অন্য দেশ ও ভাষার মানুষের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার সুযোগ এনে দেয় অনুবাদ। দার্শনিক এরিস্টটলের যুক্তিবিদ্যায় যেমন দুইটি পদকে সংযুক্ত করে দেয় হেতু পদ। তেমনই এক ভাষার মানুষের সঙ্গে অন্য ভাষার মানুষের সংযুক্ত করিয়ে দেয় অনুবাদক।
সূর্যাক্ষরের সম্পাদক রেজাউল করিমের নেয়া এক সাক্ষাৎকারে সেলিনা হোসেন বলেন, "...আমাদের বাংলা সাহিত্য অনুবাদের কাজ হবে। সারা বিশ্ব অনুবাদের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাহিত্য সম্পর্কে জানতে পারবে।" অর্থাৎ অনুবাদ সাহিত্যকে ছোট করে দেখার কিছু নেই। অনুবাদের মাধ্যমে যেমন জ্ঞান বৃদ্ধি পায় তেমনই নিজেদের সাহিত্যের পরিধি বিশ্ব ব্যাপী ছড়িয়ে পরে।
আমি যে বইটি পর্যালোচনা করবো সেটি একটি অনুবাদ গ্রন্থ। বইটি অনুবাদ করেছেন আমার শিক্ষক ক্যাথরিন পিউরীফিকেশন ম্যাডাম। আমি সাধারণত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম "YouTube" এ বই পর্যালোচনার ভিডিও দিয়ে থাকি। তবে লিখিত বই পর্যালোচনা এটাই প্রথম। যা আমার শিক্ষকের বই। আমি এজন্য গর্বিত! যারা অনুবাদ নাটকের সংকলন সন্ধান করেন তাদের জন্য এই বইটি। "ক্যাথরিন পার ও অন্যান্য" বইতে মোট ৭টি অনুবাদ নাটক রয়েছে। নাটকগুলো খুব অল্প সময়ে পড়া শেষ হয়ে যাবে। তবে প্রত্যেকটি নাটক আপনাকে নব্য চিন্তার দিকে ধাবিত করবে। ফলে একটি নাটক পড়া শেষ করে অনেক বেশি চিন্তা করার সুযোগ পাবেন। প্রথমে রয়েছে 'ক্যাথরিন পার' নাটক। যে নাটকের নাম অনুসারে বইয়ের নাম প্রাধান্য পেয়েছে। যাতে মূল চরিত্রে রয়েছে রাজা হেনরি ও ক্যাথরিন। ১৯ পৃষ্ঠা থেকে ৩০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত ১ম নাটকটিতে রয়েছে পারিবারিক দ্বন্দ্ব, বিবাদ ও ভালোবাসার প্রকাশ। যেমন- ডিম সিদ্ধ নিয়ে, আলেকজান্ডারের ঘোড়ার রং নিয়ে বিরোধপূর্ণ সংলাপ। এমনকি হেনরি ক্যাথরিন পারের প্রাণদণ্ডের জন্য নির্দেশ দেন। ২য় নাটকটির নাম 'মৃৎপাত্র'। একজন শিল্পী ও ব্যবসায়ীর মধ্যে পারস্পরিক চিন্তাভাবনার দ্বন্দ্ব তৈরি হয় গ্রিক-পাত্র কেন্দ্র করে। শিল্পীরা তাদের কর্মের যথার্থ মূল্যায়ন পায় না নিয়ন্ত্রকের থেকে। শিল্পীর মহৎ কর্ম ব্যবসায়ীর কাছে শুধু পণ্য। নাটকে জিওভান্নিকে ব্যবসায়ী বলে, "আপনারা শিল্পীরা প্রচণ্ড অদূরদর্শী।" ব্যবসায়ীর দৃষ্টিতে শিল্পীরা অদূরদর্শী হলেও নিজ অবস্থানে শিল্পীরা দূরদর্শী। ৩য় নাটকটির নাম 'পুণ্যাত্মা অ্যানিয়াস'। চরিত্র- কার্থেজের রানি ডিডো, অ্যানিয়াস, সেরেস্টাস ও সের্গেস্টাস। মূলত মহাকবি হোমার রচিত গ্রিক মহাকাব্য 'ইলিয়াড'(প্রাচীন গ্রিসের ইলিওন শহরের নামানুসারে এই মহাকাব্যের নামকরণ করা হয়।) এর দুটি মিথিকাল চরিত্র অ্যানিয়াস ও কার্থেজের রানি ডিডো'কে নিয়ে রচিত হয় নাটকটি। এরপর ৪র্থ নাটক হিসেবে রয়েছে- 'ইউরিপাইডিসের "ইলেক্ট্রা"র পর' নাটক। চরিত্রে সমূহ- সক্রেটিস, অ্যাল্কেন্ডার, ডিমেত্রিয়াস, জেনোক্লেস, অ্যান্টাগোরাস, ন্যসাইডেস, সিনেরাস, হেলিওডোর, হেলিওডোরেরে বান্ধবী চরিত্রে রয়েছে চারজন- লাইকরিস, টিমারিটা, নিসাইলা, হেগেসো ও ক্রীতদাস। এই নাটকে নিসাইলার একটি সংলাপ, "সংগীত আত্মার ভাষা। ফুলের সাথে সুগন্ধের যে সম্পর্ক, মানুষের সাথে সংগীতের সে সম্পর্ক।" নাটকে দেখা যায়, সক্রেটিস কথা কম বলে। সৃষ্টিশীল মানুষরা অন্যদের থেকে ভিন্ন। তারা সকলের মধ্যে থাকলেও তাদের মন থাকে নতুন সৃষ্টি নিয়ে। সবাই তাদের তুচ্ছ করে। যার ভিতরে সৃষ্টির তারনা সে অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সবার ভিতরে থেকেও সে একা। এই নাটকে সক্রেটিসও এমন। ৫ম নাটক রয়েছে 'ভ্যালেস্কুয়েজ এবং ভেনাস'। চরিত্র: ভ্যালেস্কুয়েজ, ডোনা সোল এবং ম্যাজো। ভ্যালেস্কুয়েজ ডোনা সোলের ছবি আঁকছিল। ডোনা সোল স্টুডিওর ছবি দেখতে চায়। ভ্যালেস্কুয়েজ পর্দার ছবিটি দেখতে নিষেধ করে। কিন্তু ডোনা সোল সেটি দেখা। যা ছিল বিশ্রী শরীরের উপর ডোনা সোলের মুখাবয়ব। সে ভ্যালেস্কুয়েজের কাছে ছবি সম্পর্কে জানতে চাইলে ভ্যালেস্কুয়েজ বলে এটা তার ছাত্র ম্যাজোর আঁকা। পরে জানা যায়। ছবিটি ভ্যালেস্কুয়েজের আঁকা। এই নাটক প্রসঙ্গে অনুবাদক মুখবন্ধে উল্লেখ করেছেন, "মৌলিক চিত্রকর্মের পাশাপাশি ভ্যালেস্কুয়েজ ও অন্য চিত্রশিল্পীদের চিত্রকর্মের রেপলিকা তৈরি করতেন ম্যাজো। ...স্বাক্ষর করতেন না বলে ভ্যালেস্কুয়েজ ও ম্যাজোর চিত্রকর্ম নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হতো।" ৬ষ্ঠ নাটক 'রোজম্যান্ড এবং ইলিয়নর'। চরিত্র: রোজম্যান্ড, ইলিয়নর, মার্গারি এবং অন্যান্য ভৃত্য। রোজম্যান্ডের বাড়িতে রানি ইলিয়নর ছদ্মবেশে জ্যোতিষী রূপে আসে। রোজম্যান্ড বলে, "ইলিয়নর যাকে ভালোবাসে তার জীবনে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা আছে। এর সমাধান ইলিয়নের প্রাণ উৎসর্গ করে প্রিয়জনের প্রাণ রক্ষা। এই সংকলনটির সর্বশেষ অর্থাৎ ৭ম নাটক 'নাটক দ্য রিহার্সেল'। যাতে চরিত্র হিসেবে আছে- নির্দেশক, মঞ্চ ব্যবস্থাপক, লেখক, লেডি ম্যাকবেথ, ব্যাঙ্কো, ম্যাকডাফ, চিকিৎসা, ভদ্রমহিলা, ১ম ডাইনি, ২য় ডাইনি, ৩য় ডাইনি এবং মি. বারবেজ। নাটকের চরিত্র ও নাম সমূহ থেকে সহজে অনুমেয় যে কোন একটি নাটকের মহড়ার ঘটনা প্রবাহ নিয়ে তৈরি দ্য রিহার্সেল নাটক। অর্থাৎ ম্যাকবেথ নাটকের অভিনয় প্রস্তুতি বা মহড়া কিংবা "রিহার্সেল" উঠে এসেছে এই নাটকে।
জিনিয়াস পাবলিকেশন থেকে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদে রয়েছে- বইয়ের নাম, লেখকের নাম, অনুবাদকের নাম ও থিয়েটার মাস্কের আইকন। প্রচ্ছদ তৈরি করেছেন মোবারক হোসেন লিটন। বইয়ের উৎসর্গ পাতায় অনুবাদক তার মা-কে বইটি উৎসর্গ করে লিখেছেন,
"উজ্জ্বল দ্যুতিময় যার চোখ
আমার মা'কে।"
অনুবাদের মা কাকলী হেনরিয়েটা রোজারিও হলি ক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা ছিলেন। অনুবাদক ক্যাথরিন পিউরীফিকেশন ম্যাডাম হলিক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, হলিক্রস কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন থিয়েটার ও পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগে। পরে যুক্ত হন শিক্ষকতার মহান পেশায়।
ক্যাথরিন পিউরীফিকেশন ম্যাডামকে যেহেতু আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি সেহেতু তার চিন্তাভাবনার প্রয়োগ সম্পর্কে আমি সামান্য ধারণা রাখি। তিনি সবসময় গভীরত্বের কথা বলেন। মানে আপনি যে কাজ করবেন সেই কাজ সম্পর্কে আপনার গভীর ধারণা থাকবে। যেমন- আপনি যদি কোন নাট্যকারের নাটক মঞ্চস্থ করতে চান তাহলে আপনাকে ঐ নাট্যকারের "আদি, মধ্য ও অন্ত" অর্থাৎ নাট্যকারের জীবনী সম্পর্কে জানতে হবে। এই তথ্য উপাত্তের উপর ম্যাডাম বেশ গুরুত্ব প্রদান করেন। যার প্রভাব দেখতে পারি 'ক্যাথরিন পার ও অন্যান্য' বইয়ের মুখবন্ধে। এখানে মরিস ব্যারিং এর জীবনের সংক্ষিপ্ত রূপরেখা লক্ষণীয়। সঙ্গে রয়েছে ৭টি নাটক সম্পর্কিত লেখা।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের নাটক নতুন প্রেক্ষাপট লাভ করে। এ সময়ে মৌলিক রচনার পাশাপাশি অনুবাদ ও রুপান্তর নাটক বেশ এগিয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে রামেন্দু মজুমদার “বাংলাদেশের নাটক: ১৯৭২-৮৬” শিরোনামের প্রবন্ধে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেছেন- কবীর চৌধুরী, আলী যাকের, আতাউর রহমান, আসাদুজ্জামান নূর, আবু শাহরিয়ার, আবদুল হক, আবদার রশীদ, মুস্তাফিজুর রহমান, জামিল আহমেদ ও তারিক আনাম খান প্রমুখ উল্লেখযোগ্য অনুবাদ বা রুপান্তর করেছেন।
একটি ভাষার লেখা বিভিন্ন ভাষায় যেমন অনুবাদ হতে পারে তেমনি একটি রচনা একটি ভাষার বিভিন্ন মানুষ অনুবাদ করতে পারেন। যখন একটি লেখা একটি ভাষার অনেক অনুবাদক অনুবাদ করেন তাহলে পাঠক সবসময় যে অনুবাদটি ভালো ও তাৎপর্যপূর্ণ সেই বই বা লেখা পড়েন। আমার জানা মতে “ক্যাথরিন পার ও অন্যান্য” বইতে যে সকল নাটক রয়েছে তা অন্য কোন অনুবাদক বাংলা অনুবাদ করেনি। যদি করেও তাহলে এই বইটির সংলাপের গভীরত্ব ও শব্দশৈলী অন্য সকল অনুবাদক থেকে ভিন্ন হবে।
পরিশেষে, বই সম্পর্কে কথা বলার মূলকারণ হলো বই পড়তে অন্যদের আগ্রহী করে তোলা। আশা করি আপনি বইটি পড়বেন। আমি, আপনি, আমরা সবাই যদি বই পড়তে শুরু করি তাহলে পৃথিবী বইয়ের হবে। যা আমাদের কাম্য! বাংলায় বহুল প্রচলিত প্রবাদ হচ্ছে, “শেষ ভালো যার সব ভালো তার।” তাই শেষটা করছি ক্যাথরিন পিউরীফিকেশন ম্যাডামের মুখবন্ধের লেখা উল্লেখ করে, “সহোদর ভাষার পৃথ্বীখ্যাত নাটকগুলি মাতৃভাষায় প্রাণ পেলে ভ্রাতৃত্ব ছাড়া অন্য কিছুর সম্ভবনা নেই। ‘সহস্রপদশতদল’-এর মতো তা আমাদের চিন্তাজগৎ অধিকার করে বিকশিত হোক।”
গ্রন্থপঞ্জি:
- ক্যাথরিন পার ও অন্যান্য, ক্যাথরিন পিউরীফিকেশন, জিনিয়াস পাবলিকেশন, ফেব্রুয়ারি ২০২১।
- লাল নীল দীপাবলি বা বাঙলা সাহিত্যের জীবনী, হুমায়ুন আজাদ, পৃ: ৪৩
- সূর্যাক্ষর ১ম বর্ষ ১ম সংখ্যা, সম্পাদক রেজাউল করিম, সাক্ষাৎকার।
- ‘বাংলাদেশের নাটক: ১৯৭২-৮৬’, বাংলাদেশের নাট্যচর্চা, রামেন্দু মজুমদার, নভেম্বর ১৯৮৬।
লেখক: মুহাম্মদ আল ইমরান।
(ক্যাথরিন পিউরীফিকেশন ম্যাডামের শিক্ষার্থী।)
(ঢাকা, বাংলাদেশ।)
সোমবার, ১৫ই আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ।
Comments
Post a Comment