এক সময় যখন টেলিভিশন ছিল না তখন রেডিও শুনে মানুষ অবসর সময় অতিবাহিত করত। গ্রামে যাদের বাড়ি রেডিও থাকত তাদের বাড়ি ভিড় পরে যেত। এটা আমার কাছে গল্প। কেননা আমি ঐ রেডিওর শব্দ শুনে বড় হই নাই। আমার শৈশবে সব ছিল। তবে রেডিও অনেকের কাছে আবেগের নাম। এখনও আমাদের দেশে সরকারি বেসরকারি বেশ কিছু রেডিও প্রতিষ্ঠান চলমান আছে।
আমিও মাঝেমধ্যে শখ করে রেডিও শুনি। হঠাৎ একদিন রেডিওতে এক পরিচিত কণ্ঠ ভেসে আসে। যে কণ্ঠকে আমি সহজভাবে বলতে চাই, 'এ কণ্ঠ যেন কবিতার জন্য'। হ্যাঁ, ঐদিন আমি শুনতে পেলাম ড. মনজুরুল হক স্যারের কণ্ঠ। তাৎক্ষণিকভাবে স্যারকে text করি- শিওর হতে। স্যার উত্তরে জানান ওটা তার কণ্ঠ।
একদিন সামিয়া ম্যাডামের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে রেডিও নিয়ে কথা হয়। তখন ম্যাডাম Bangladesh-Canada Association of Ottawa Valley'র আয়োজনের একটা রেডিও ক্লিপ আমাকে দেন। সেখানে সামিয়া ম্যাডামের কথোপকথন শুনতে পাই।
উপর্যুক্ত দুইটি ভিন্ন ঘটনা রেডিওকে কেন্দ্র করে। পরিচিত মানুষের কণ্ঠ অনাকাঙ্ক্ষিত উপায়ে শোনা অন্যরকম অনুভূতি। অনাকাঙ্ক্ষিত বললাম এই কারণে- আমি নিয়মিত রেডিওর শ্রোতা নই যে স্যারের কণ্ঠ শুনতে পাব৷ বলা যায় অদ্ভুত কাকতালীয়ভাবে শুনতে পেয়েছি। আবার সামিয়া ম্যাডামের সঙ্গে রেডিওর কথা না উঠলে হয়তোবা তিনি তার রেডিওতে কথা বলার ক্লিপ পাঠাতেন না। তবে ঐ ঘটনা দ্বয় থেকে অনুধাবন করতে পারলাম আগে মানুষ অবসর বিনোদন বা গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ শোনার জন্য রেডিওর উপর কত নির্ভর ছিল। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে রেডিও যে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে তা বলতে দ্বিধা নেই।
প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি আসক্তি মনে হচ্ছে আমাদের সামাজিকভাবে দুর্বল করে দিচ্ছে। এখন আর রেডিওতে কথা শুনে সেই কথার দৃশ্যপট কল্পনা করতে হয় না। বরং খুবই সহজে দৃশ্যমান হয় ঘটনা প্রবাহ। প্রতিনিয়ত এই দৃশ্যমানতা আরো দৃঢ় হচ্ছে। তবে এই দৃঢ়তা কি ইতিবাচক দিকে ধাবিত হচ্ছে? মানুষ কি তার চিন্তা করার ক্ষমতা হারাচ্ছে? এসব প্রশ্ন নিয়ে ভাবনার প্রয়োজন রয়েছে।
পরিশেষে, রেডিও নিয়ে বেশি কথা বলতে না পারলেও এই রেডিও'র প্রতি মানুষের আবেক কিছুটা হলেও আমি বুঝতে পেরেছি আমার দুইজন শিক্ষকের কণ্ঠ রেডিওতে শুনে।
মুহাম্মদ আল ইমরান।
সোমবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ নভেম্বর ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ।
Comments
Post a Comment