তারেক মাসুদ ১৯৫৬ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার নূরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার সম্পূর্ণ নাম আবু তারেক মাসুদ হলেও তিনি তারেক মাসুদ নামেই বেশ পরিচিত। তার পিতার নাম মশিউর রহমান মাসুদ ও মাতার নাম নুরুন নাহার মাসুদ। তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ। তার পূর্বের নাম ক্যাথরিন শেপিয়ার(Catherine Lucretia Shapere)। তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদের এক পুত্র সন্তান রয়েছে, নাম ‘বিংহাম পুত্রা মাসুদ নিশাদ’। তারেক মাসুদ ঢাকার লালবাগ মাদ্রাসা থেকে মৌলানা পাস করেন। তবে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তার মাদ্রাসা শিক্ষার সমাপ্তি ঘটে। পরে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রাইভেটে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে পাশ করেন। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে আইএ পাশ করেন করে নটর ডেম কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
তারেক মাসুদের
বাবা মশিউর
রহমান মাসুদের
ব্যক্তিজীবনের সঙ্গে
যেন মীর
মশাররফ হোসেনের
সাহিত্য রচনার
মিল পাওয়া
যায়। ঔপন্যাসিক,
নাট্যকার ও
প্রাবন্ধিক মীর
মশাররফ হোসেন(১৩ নভেম্বর ১৮৪৭
- ১৯ ডিসেম্বর
১৯১২) এর
প্রথম জীবনের
রচনাসমূহ ধর্ম
ভিত্তিক ছিল
না(যেমন:
জমিদার দর্পণ
– ১৮৭৩, মনের
কথা ১৮৯০,
গাজী মিয়ার
বস্তানী - ১৮৯৯)
আবার তিনিই
জীবনের শেষ
পর্যায়ে লিখেছেন,
মেীলুদ শরীফ
– ১৯০৫, মদিনার
গেীরব – ১৯০৬,
ইসলামের জয়
– ১৯০৮। ইতিহাসবিদ
ও সাহিত্যিক
মুনতাসীর মামুন
লিখেছেন,
“এক
পর্যায়ে
যিনি
প্রগতিশীল
পরবর্তীকালে
দেখা
যায়
তিনিই
হয়ে
উঠেছেন
রক্ষণশীল।”১
তারেক মাসুদের
বাবা একসময়
নাট্য আন্দোলনের
সঙ্গে যুক্ত
ছিলেন। “ভারতীয়
গণনাট্য
সংঘের
শম্ভু
মিত্র,
তৃপ্তি
মিত্র,
বিজন
ভট্টাচার্য,
সলিল
চৌধুরীদের
মতো
ব্যক্তিদের
সঙ্গে
মিলে
তারেক
মাসুদের
বাবা
মশিউর
রহমান
মাসুদও
তখন
পথে
পথে
নাট্য
আন্দোলন
গড়ে
তুলছেন।”২ এ প্রসঙ্গে
তারেক মাসুদের
কথা উল্লেখ
করছি, তিনি
বলেছেন- ”বেণুর(সঙ্গীতশিল্পী
মাহমুদুর
রহমান
বেণু)
ডিরেক্ট
মিউজিক
টিচার,
ক্লাসিক্যাল
মিউজিকের
সমস্ত
তালিম
কিন্তু
আমার
বাবার
দেওয়া।
আমার(তারেক
মাসুদ)
বাবা
অর্থাৎ
বেণুর
ছোট
কাকা
এখনো
তাদের
আদর্শ।”৩ কিন্তু
তারেক মাসুদের
নানি মারা
যাওয়ার পর
তার বাবার
জীবনে পরিবর্তন
আসে। তিনি
ধর্মীয় কার্যকলাপের
প্রতি বিশেষ
মনোযোগী হন।
তবে একথা
বলতে কোন
দ্বিধা নেই
যে তারেক
মাসুদের পরিবার
সংস্কৃতি সচেতন
ছিলেন।
মনিস রফিক
তার “তারেক
মাসুদ চলচ্চিত্রের
আদম সুরত”
গ্রন্থে ‘তারেক
মাসুদ আদম
সুরতের সন্ধানে
আরেক আদম
সুরত’ শিরোনামে
লিখেছেন কীভাবে
তারেক মাসুদ
চিত্রশিল্পী এস
এম সুলতান(১০ আগস্ট ১৯২৩
- ১০ অক্টোবর
১৯৯৪) কে
নিয়ে তৈরি
করেন আদম
সুরত(The Inner Strength) প্রামাণ্যচিত্র। বাংলাদেশ
ফিল্ম আর্কাইভের
ফিল্ম অ্যাপ্রিসিয়েশন
কোর্স শেষে
তারেক মাসুদ
পড়াশোনার জন্য
বিদেশে চলে
যাওয়ার কথা
জানাতে যান
কোর্সের ক্যামেরার
শিক্ষক আনোয়ার
হোসেনকে। তখন
তিনি বললেন, “আজকের
কাগজ
দেখেছ?
আমি(তারেক
মাসুদ)
বললাম,
না।
তিনি
আবার
বললেন,
ইত্তেফাক
খুলে
দেখো,
ব্যাক
পেইজে
বড়
করে
নিউজ
শিল্পী
সুলতান
হাসপাতালে,
মারাত্মকভাবে
অসুস্থ।
তুমি
যদি
এখন
পড়তে
বাইরে
চলে
যাও,
ফিরে
এসে
দেখবে
শিল্পী
নেই।
তোমার
মনের
মধ্যে
কিন্তু
বিরাট
আফসোস
থেকে
যাবে।
আমি
আনোয়ার
ভাইকে
বললাম,
আমি
বাইরে
যাওয়ার
যাবতীয়
কাজ
সেরে
ফেলেছি,
আমি
চলে
যাব।”৪ এ কথা
বলে তারেক
মাসুদ আনোয়ার
হোসেনের জিগাতলার
বাসা থেকে
বের হয়ে
জিগাতলা বাসস্ট্যান্ডে
৬ নাম্বার
বাসের জন্য
দাঁড়িয়ে ছিল।
তখন বাস
আসতে দেরি
করে। জিগাতলা
বাসস্ট্যান্ডের রাস্তায়
তারেক মাসুদের
মাথায় নব্য
বুদ্ধি আসে,
বিদেশ যাওয়ার
চিন্তা বাদ।
বিদেশ যাওয়ার
জন্য যে
টাকা ছিল
তা দিয়ে
চিত্রশিল্পী এস
এম সুলতানের
ওপর ছবি
বানানোর কথা
ভাবেন। তারেক
মাসুদের এই
ভাবনার ফলে
দেশে যুগান্তকারী
এক প্রামাণ্যচিত্র
তৈরি হয়।
যাতে শিল্পী
এস এম
সুলতানের দৈনন্দিন
কর্ম ও
শিল্পজীবন চিত্রায়ণের
পাশাপাশি বাংলার
সংস্কৃতি এবং
কৃষি চিত্র
তুলে ধরা
হয়েছে। ক্যাথরিন
মাসুদ ’সমকাল’
এ “আদম
সুরত ও
তারেক মাসুদ”
শিরোনামে লিখেছেন,
“এটি(ডিজিটাল
ভার্সনে
রূপান্তরিত
'আদম সুরত')
সাধারণ
কোনো
ডিভিডি
নয়।
সুলতানের
ওপর
তৈরি
এক
সমৃদ্ধ
দলিল।” ৫ এই
সমৃদ্ধ দলিল
তৈরির পিছনে
বেশ বড়
একটি গল্প
রয়েছে।
১৯৯৫ সালে
নির্মাণ করেন,
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের
সময় ভ্রাম্যমাণ
গানের দল
নিয়ে “মুক্তির
গান”।
মুক্তির গান
নিয়ে পৃথক
আলোচনার প্রয়োজন
রয়েছে। সার্বিক
ধারণা থেকে
বলতে চাই-
‘তারেক মাসুদ
ও ক্যাথরিন
মাসুদ পরিচালিত
মুক্তির গান:
সম্পাদনা টেবিলে
যুদ্ধক্ষেত্র’।
২০০২ সালে
তার প্রথম
পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
‘মাটির ময়না’
মুক্তি পায়।
‘মাটির ময়না’
অনেক উৎসবে
প্রদর্শিত হয়
ও বেশ
প্রশংসা অর্জন
করে।
তারেক মাসুদ
ও ক্যাথরিন
মাসুদের চিন্তা
ভাবনা ছিল
তরুণ প্রজন্ম
নিয়ে। তারা
শুধু ক্যামেরা
বন্দী ফ্রেমের
কথাই চিন্তা
করেন নাই,
ঐসময়ে অ্যানিমেশন
নির্মাণেও দেখিয়েছেন
দক্ষতা। “১৯৯২
সালে
স্ত্রী
ক্যাথরিন
মাসুদের
সাথে
যৌথভাবে
তারেক
একটি
অ্যানিমেশন
শর্টফিল্ম
নির্মাণ
করেন
যার
দৈর্ঘ্য
মাত্র
তিন
মিনিট।”৬“প্রথম
অ্যানিমেশন-চিত্র
ইউনিসন।”৭ বর্তমান
সময়ে এসে
অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রের
প্রতি ঝোঁক
লক্ষণীয় নতুন
প্রজন্মের। সেক্ষেত্রে
তারেক মাসুদ
ও ক্যাথরিন
মাসুদের নির্মাণ
ভাবনায় অ্যানিমেশন
চলচ্চিত্রের স্থান
পাওয়া নিশ্চয়ই
তৎকালীন সময়ে
নব্য বার্তা
দিত কিংবা
উন্মাদনা সৃষ্টি
করত।
“রানওয়ে
তারেক
ও
ক্যাথরিনের
নিজস্ব
অর্থায়নে
নির্মিত
চলচ্চিত্র।
তাঁদের
নিজেদের
একটি
জমি
বিক্রি
করে
তাঁরা
এ-চলচ্চিত্রটি
নির্মাণ
করেছেন।”৮ প্রথমদিকে
নিজের বিদেশে
পড়াশোনা করার
অর্থ দিয়ে
‘আদম সুরত’
তৈরির জন্য
ব্যয় করলেন।
আবার জমি
বিক্রি করে
চলচ্চিত্র বানালেন।
আসলে টাকা
পয়সা, জমি
এসব কিছু
তুচ্ছ করে
রাস্তায় নিজের
জীবন দিয়ে
গেলেন চলচ্চিত্রের
জন্য। “তারেক
মাসুদের
‘কাগজের ফুল’
চলচ্চিত্রের
শুটিংয়ের
লোকেশন
নির্বাচন
শেষে
দুপুর
১২টা
২০
মিনিটে
ঢাকার
উদ্দেশে
রওনা
দেন।
পথে
ঘিওরে
ঢাকা-আরিচা
মহাসড়কে
বিপরীত
দিক
থেকে
আসা
একটি
বাসের
সঙ্গে
মাইক্রোবাসটির
মুখোমুখি
সংঘর্ষ
হয়।
এতে
ঘটনাস্থলেই
তারেক
মাসুদ,
শহীদ
বুদ্ধিজীবী
মুনীর
চৌধুরীর
মেজ
ছেলে
মিশুক
মুনীর,
তারেক
মাসুদের
সঙ্গে
কাজ
করা
ওয়াসিম,
জামাল
ও
মাইক্রোবাসের
চালক
মোস্তাফিজের
মৃত্যু
হয়।”৯ চিন্তাবিদ ও
লেখক অধ্যাপক
সলিমুল্লাহ খান
তারেক মাসুদ
সম্পর্কে স্মৃতিচারণ
করে বলেছেন,
“...আমি
বলিব
ঢাকা
শহরে
তারেক
মাসুদ
নাই
বলিয়া
এই
শহর
বসবাসের
আরো
অযোগ্য
মনে
হইতেছে।”১০ তারেক মাসুদের
চলে যাওয়ায়
এই দেশের
জন্য ক্ষতি
হলো। আমরা
সৃষ্টিশীল মানুষ
হারালাম সড়কে।
একজন তারেক
মাসুদ আমাদের
কাছে কত
সুন্দর করে
ইতিহাসকে তুলে
ধরার জন্য
চলচ্চিত্র জগতে
আগমন করেছেন।
হয় তো
বাংলাদেশের ইতিহাসে
অনেক নির্মাতা
আসবেন কিন্তু
একজন তারেক
মাসুদ আসবেন
না। আমার
বিশ্বাস তারেক
মাসুদ আমাদের
সঙ্গে আছেন।
তারেক মাসুদ
জাতীয় চলচ্চিত্র
পুরস্কার(১৯৯৬
ও ২০০৩),
ফিল্ম সাউথ
এশিয়া(১৯৯৭),
ডিরেক্টরস গিল্ড
অব গ্রেট
ব্রিটেন(২০০৪),
কেরালা আন্তর্জাতিক
চলচ্চিত্র উৎসব(২০০৩) ইত্যাদি
সহ আরো
বেশ কিছু
পুরস্কার ও
সম্মাননা অর্জন
করেন। তিনি
২০১২ সালে
মরণোত্তর বাংলাদেশের
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ
বেসামরিক পুরস্কার
একুশে পদক
লাভ করেন।
পরিশেষে, তারেক
মাসুদ নিজে
একটি পথ
তৈরি করে
গেছেন সেই
পথ অনুসরণ
করে তরুণ
নির্মাতারা এগিয়ে
যাচ্ছে স্বাধীন
চলচ্চিত্র নির্মাণের
দিকে। তারেক
মাসুদ ও
তার স্ত্রী
ক্যাথরিন মাসুদ
যে সকল
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র,
পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র,
প্রামাণ্যচিত্র ও
অ্যানিমেশন নির্মাণ
করেছেন তা
আমাদের দেশের
জন্য অমূল্য
সম্পদ হয়ে
থেকে যাবে।
তারেক মাসুদের
“মৃত্যুর
১১
বছর
পর
নিজের
জেলায়
গঠিত
হলো
তাঁর
নামে
চলচ্চিত্র
সংসদ।”১১ ’তারেক মাসুদ
মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’
তারেক মাসুদের
নির্মিত কাজের
প্রচার ও
সংরক্ষণ করে
থাকে। তার
বই প্রকাশিত
সমূহ: চলচ্চিত্রযাত্রা,
চলচ্চিত্রলেখা : চিত্রনাট্য
ও গান,
আদম সুরত,
তিনে নেত্র,
আবুল হোসেনের
সঙ্গে কথোপকথন(আবদুল মান্নান
সৈয়দ , তারেক
মাসুদ) ইত্যাদি।
তার স্ত্রী
ক্যাথরিন মাসুদ
লিখেছেন- তারেক
মাসুদ : জীবন
ও স্বপ্ন(Tareq
Masud : Jibon O Shopno)। তারেক
মাসুদ ও
ক্যাথরিন মাসুদের
সৃষ্টিকর্ম আমাদের
চিন্তাজগৎ অধিকার
করে বিকশিত
হোক।
·
গ্রন্থপঞ্জি
১. মুনতাসীর
মামুন,
উনিশ
শতকে
পূর্ববঙ্গের
থিয়েটার
ও
নাটক,
সময়
প্রকাশন,
পৃ:
৫৫
ও
৫৬।
২.
মনিস
রফিক,
তারেক
মাসুদ
চলচ্চিত্রের
আদম
সুরত,
রোদেলা
প্রকাশনী,
পৃ:
২৭।
৩.
মনিস
রফিক,
তারেক
মাসুদ
চলচ্চিত্রের
আদম
সুরত,
রোদেলা
প্রকাশনী,
পৃ:
২৪।
৪.
মনিস
রফিক,
তারেক
মাসুদ
চলচ্চিত্রের
আদম
সুরত,
রোদেলা
প্রকাশনী,
পৃ:
১৭।
৫.
ক্যাথরিন
মাসুদ,
আদম
সুরত
ও
তারেক
মাসুদ,
সমকাল,
১১
ডিসেম্বর
২০১৪।
https://web.archive.org/web/20210102103029/https://samakal.com/todays-print-edition/tp-others/article/1412104258/%E0%A6%86%E0%A6%A6%E0%A6%AE-%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%A4-%E0%A6%93-%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%95-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%A6
৬. বাংলা
মুভি
ডেটাবেজ,
তারেক
মাসুদ:
https://bmdb.com.bd/person/1133
৭. ফাহমিদুল
হক,
মাসুদ,
তারেক,
বাংলাপিডিয়া:
https://bn.banglapedia.org/
৮. সাজেদুল
আউয়াল,
তারেক
মাসুদ
তাঁর
লোকচলচ্চিত্র,
কালি
ও
কলম,
https://www.kaliokalam.com/
৯. নিজস্ব
প্রতিবেদক
মানিকগঞ্জ,
তারেক
মাসুদ
ও
মিশুক
মুনীরসহ
নিহত
৫,
প্রথম
আলো,
১৩
আগস্ট
২০১১
১০. সলিমুল্লাহ
খান,
প্রার্থনা,
আমার
শিক্ষক
তারেক
মাসুদ,
ঢাকা:
মধুপোক,
২০১৯,
পৃ.
৪৯-৫৫।
১১. নিজস্ব
প্রতিবেদক
ঢাকা,
তারেক
মাসুদ
ফিল্ম
সোসাইটির
যাত্রা
শুরু,
প্রথম
আলো,
২৭
মার্চ
২০২২
Comments
Post a Comment